শিখে নিন পাওনা টাকা আদায়ের দারুণ কৌশল !

প্রয়োজনে কম-বেশি সবাইকে টাকা ধার নিতে হয়। আবার অনেক সময় নিজেকেও অন্যজনকে থাকা ধার দিতে হয়। কিন্তু স’মস্যাটি হয় তখন, যখন পাওনা টাকা আদায়ের সময় আসে।

টাকা ধার নেয়ার সময় বিনয়ী থাকলেও, ফেরতের সময় তা মোটেও থাকে না। তবে পাওয়ানা টাকা আদায়ের জন্যও আছে দারুণ কৌশল। চলুন জেনে নেয়া যাক উদাহরণসহ সমাধানের উপায়-

করিম একজন শান্তিপ্রিয় ভদ্রলোক। তার একটি পাইকারি মাল বিক্রির দোকান আছে। রহিম করিমের দোকানের একজন নিয়মিত ক্রেতা। নিয়মিত ক্রেতা সেই সুবাদে রহিম প্রায় সময়ই করিমের দোকানে বাকিতে পণ্য ক্রয় করে থাকে।

এভাবেই এক সময় রহিম প্রচুর পরিমাণে বাকিতে পণ্য ক্রয় করে যাচ্ছে। একসময় করিম রহিমের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা বকেয়া পাওনা হয়ে যায়। বকেয়া টাকা উঠানোর জন্য করিম রহিমের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে এখন ক্লান্ত। বকেয়া টাকা সে তার কাছ থেকে তুলতে পারল না।

কীভাবে রহিমের কাছ থেকে এই পাঁচ লাখ টাকা তুলতে পারবে তা নিয়ে করিম ভীষণ চিন্তায় পরে গেল। একসময় সে বুঝতে পারল এভাবে তার কাছ থেকে টাকা তুলতে পারবে না।

তাকে রহিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কীভাবে রহিমের কাছ থেকে সে পাঁচ লাখ টাকা পাওনা আদায় ক’রতে পারবে সে সস্পর্কে জানতে সে গেল একজন আইনজীবীর কাছে।

ব্যবসা পরিচালনার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোককে বাকিতে মাল দিতে হয়। তবে অনেক সময় অনেক অসাধু লোক উক্ত টাকা পরিশোধ করে না। এটা যে শুধুমাত্র উক্ত দেনাদারের আর্থিক অক্ষমতার কারণে হয়ে থাকে তা নয়।

কিছু মানুষ আছে যারা পাওনা টাকা পরিশোধ না করে পাওনাদারকে পিছনে ফেলতে খুব আনন্দ পায়। আবার কিছু লোক আছে যারা স্থানীয়ভাবে খুব প্রভাবশালী। তারা মানুষকে হয়রানি করতেও কেন যেন পছন্দ করে। এখন আমরা জেনে নিব কীভাবে করিম রহিমের কাছ থেকে সেই পাঁচ লক্ষ টাকা আদায় করবে।

এজন্য করিমকে যে সমস্ত কাগজপত্র আনতে হবে তা হলো- করিম যে রহিমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা পায় সেই টাকা দাবীর সাপেক্ষে যে সমস্ত কাগজ পত্র বা যে সমস্ত প্রমাণ করিমের কাছে আছে সে সব কিছু নিয়ে আসতে হবে। যেমন- রশিদ থাকতে পারে-ইত্যাদি যে সমস্ত ডকুমেন্টগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আসতে হবে।

মূল মামলায় যাওয়ার আগে করিমকে প্রথমেই একজন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে উক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে রহিমকে লিগ্যাল নোটিশে করিমের পাওনা পাঁচ লক্ষ টাকা পরিশোধ ের জন্য কয়েক দিন সময় দিতে হবে। এই নোটিশে রহিমকে ৩০ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হল।

উক্ত নোটিশে আরো লিখতে হবে উক্ত টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উক্ত লিগ্যাল নোটিশটি অবশ্যই রেজিস্ট্রারে ডাক যোগে রহিমের ঠিকানায় পাঠাতে হবে। লিগ্যাল নোটিশে দেয়া উক্ত সময়ের মধ্যে যদি রহিম করিমের পাওনা টাকা পরিশোধ করে তাহলেতো ভালো।

তবে এই সময়ের মধ্যে যদি উক্ত টাকা পরিশোদ না করে সেক্ষেত্রে করিমকে রহিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণগুলো সঙ্গে নিয়ে করিমকে যেতে হবে নিকটতস্থ কোর্টে। সেখানে গিয়ে একজন ভালো আ’ইনজীবীর মাধ্যমে করিমকে রহিমের বিরুদ্ধে একটি মানি সুটের মামলা করতে হবে।